বাড়ীতে বসে চুল পরা কমানোর উপায়ঃ

 

বাড়ীতে বসে চুল পরা কমানোর উপায়ঃ

চুল নিয়ে যত প্রকার সমস্যা আছে তাঁর মধ্যে এই চুল পরা সমস্যাটি প্রায় সকলের হয় থাকে যার জন্য সকলে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কেননা চুল এমন একটা শারীরিক অঙ্গ যা না থাকলে শরীর অপূর্ণ দেখায়। চুল পড়ার সমস্যাটি নিয়ে কি আপনিও ভুগতেছেন? তাহলে আমদের এই পোষ্টটি শুধুমাত্র আপনার বা আপনাদের জন্য। কেননা আজকের এই পোষ্টটিতে আমরা ঘরে বসে চুল পরা বন্ধ করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় সম্পর্কে জানব বা কথা বলব।

প্রতিদিন আমাদের মাথা থেকে ৫০-১০০ টি চুল পড়ে যাওয়া একেবারে স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। কিন্তু এটা চিন্তার কারণ হয় দাড়ায় যখন এই চুল পড়ার মাত্রা ৫০-১০০ এর থেকে বেড়ে যায়।

আজকের এই পৃথিবীতে উজ্জল সুন্দর বড় এবং ঘন চুলের অধিকারি হতে চান প্রতেকেই। কিন্তু অযথা বা অকালে চুল ঝরে পরা, সকলে সেই প্রত্যাশিত স্বপ্নের পথে প্রধান বিপদ বা বাধা হয় দাড়ায়।  আপনার চুল ঝরে পড়ার এই প্রকট বিপদ বা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে চুল পরা বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। তারপর আপনি যদি সেই নিয়ম অনুযায়ী কাজ করেন তাহলে আপনি অকালে বা অসময়ে চুল উঠে যাওয়া বা অসময়ে টাক হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন। তো চলেন আজকের এই চুল ঝরে পড়ার কারাণ ও চুল ঝরে না পড়ার উপায় সম্পর্কের আলোচনাটি শুরু করি। তো আমারা প্রথমে আলোচনা করব চুল কেন ঝরে পড়ে বা চুল ঝরে পড়ার কারণ। তারপর আমরা জানব এর উপায় সম্পর্কে যে কি কাজ করলে এই চুল ঝরে পরা বা চুল না পরা বা টাক হওয়া থেকে কিভাবে বাঁচাব।

চুল পড়ার কারণ

বাড়ীতে বসে চুল পরা কমানোর উপায়ঃ


নানা কারণে চুল পরা বেড়ে যায় বা বেড়ে যেতে পারে যথাঃ ১. পরবেশ দূষণ, ২. বয়স ৩. স্ট্রেস ৪. পুষ্টির অভাব ৫. হরমনাল ইনবেলেঞ্চে ৬. জেনেটিক কারণ ৭. স্কাল্ক ইনফেকশন ৮. হেয়ার প্রোডাক্ট এর মাত্রার অধিক ব্যাবহার ৯. বেশ কিছু রোগ বা ওষুধের পার্শ্ববর্তি ক্রিয়ার কারণে  ১০. থাইরয়েড রোগের কারণে ১১. অটোইমইউন ডিজজ এর কারনে ১২. পল্লস্তিক অভারিয়াইন সিনড্রোম এর কারণে ১৩. অ্যানিমিয়া সহ নানা কারণে চুল পড়তে থাকে বা চুল পড়ার মাত্রা বেড়ে যায়।

 এক্ষেত্রে যত তারাতারি সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা নাহলে কিন্তু মাথায়ে টাক দেখা দিতে বা মাথা ফাঁকা হতে খুব বেশী সময় লাগবেনে। এখানে আমরা কিছু ঘরে বসে চুল পরা কমানোর উপায় সম্পর্কে বলা হবে যেগুলো আপনার চুল পরা কমানোর মতো বড় সমস্যার সমাধান বা চুল পরা কমানো থেকে বাচাতে পারবে। চুল যে কত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ তা একটি চুল ছাড়া বা টাক মাথাওয়ালা মানুষই ভাল ভাবে বলতে পারবে।

খুব সহজে আপনার চুল পরা কমানোর এমন কয়েকটি ঘরোয়া টেকনিক ও তাঁর গুন সম্পর্কে আজ আমরা এই পোস্ট এ আলোচনা করব। তো আর দেরী না করে চলেন দেখে নিয়ে আসি যে কিভাবে চুল পরা কমানো যায়ঃ

চুল পরা বন্ধ করার উপায়

বাড়ীতে বসে চুল পরা কমানোর উপায়ঃ


মেথিঃ

চুল পড়ার জন্য শতশত কারণ হতে পারে। তবে চুল পরা বন্ধ করার জন্য মেথি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে কাজ করে থাকে। তো এই মেহি ব্যাবহার করার জন্য রাতে গুমাতে যাওয়ার আগে মেথি জলে বা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে সেই মেথি জল থেকে ঝরিয়ে নিয়ে একটি পাত্রে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ওই মেথি দিয়ে তৈরি করা ঘন পেস্টটি সারা মাথা ও চুলে লাগিয়ে নিন। তবে যদি মেথি আপনার মাথা এবং চুলে দিয়ে বেঁচে যায় তাহলে আপনি তা আপনার মুখে লাগাতে পারেন। তারপর ১ ঘণ্টা ধরে মাথা তা শুকান যখন দেখবেন যে আপনার মাথা এবং চুল সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে গেছে তখন আনি আপনার চুল এবং মাথা ধুয়ে নিবেন। আর এই পদ্ধতিটি মাসে ২বার ব্যাবহার করে দেখুন। ইনশাআল্লাহ আপনার চুল পরা কমে যাবে।

পেঁয়াজঃ

পেঁয়াজ প্রায় আমাদের প্রতেকেরই ঘরে বা বাড়ীতে থাকে। তবে কি আপনি জানেন যে আপনার ঘরে থাকা এই পেঁয়াজ কিভাবে আপনার চুল পরা কমাতে পারে। যদি আপনার মাথায় থাকা চুল স্বাভাবিকের তুলনায় বেশী পরিমাণে পড়ে তাহলে আপনার বাসায় থাকা এই পেঁয়াজটি আপনার জন্য খুব ভাল একটি টিপস চুল পরা কমানোর জন্য।

পেঁয়াজে থাকে সালফার আর এই পেঁয়াজে থাকা সালফার চুলের হেয়ার ফলিকেলসে রক্ত চলাচল বারিয়ে দিয়ে নিমিষে চুল পরা রধ বা বন্ধ করে দিতে পারে।  পেয়াজের উপকারিতা এখানেই শেষ নয় কেননা পেঁয়াজ রষে রয়ছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্তি ব্যাকটেরিয়াল প্রপারটিজ যা স্কাল্কের ঘরে বসে থাকা ক্ষতিকারক জীবাণুকে মেরে ফেলে। ফলে স্কাস্লের ইনফেকশনের কারণে চুল পরা রধ হয়। এখন প্রশ্ন কিভাবে  চুলে লাগাবেন পেঁয়াজ রস।  তো পেঁয়াজ রস লাগানর জন্য আপনি একটি পেয়াজকে কেটে নিবেন এবং তারপর সেই পেঁয়াজকে আপনি পানিতে ভিজিয়ে নিবেন। তারপর  সেই পেঁয়াজ পানি আপনি আপনার মাথায় লাগাবেন। এভাবে প্রতি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যাবহার করলেই আপনার চুল পড়ার] সমস্যা সমাধান হয় যাবে।

ডিমের পুষ্টিঃ

সালফার, ফসফরাস, সেলেনিয়াম, আয়োডিন, জিঙ্ক আর প্রোটিনের মাত্রা ভরপুর হয় থাকে ডিম যা চুল পড়া রোধ করে চুল বৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দেয়। ডিমের হেয়ার মাস্ক ভীষণই উপকারী হেয়ার ফল কম করতে এটিও একটি ঘরোয়া টোটকা।এক চা-চামচ অলিভ অয়েল আর এক চা-চামচ মধু এর সাথে একটা কাচের বাটিতে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। চুলের গোড়া থেকে আগা ভাল করে সেই মিশ্রণটি ভাল করে ফুটিয়ে নিয়ে ভাল করে লাগিয়ে নিন।  চুলটা২০ -৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু ধুয়ে ফেলুন।এই হেয়ার প্যাক গুলো একটু গন্ধযুক্ত হয়। তাই এগুলো বাথরুম বা জনসমাগম থেকে অন্য কোন জায়গায় গীয়ে ব্যবহার করলে ভালো হয়।

আমলকিঃ

বাড়ীতে বসে চুল পরা কমানোর উপায়ঃ


আমলকির চুল পড়া আটকানোর পাশপাশি চুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করতেও কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ আমলকিটে উপস্থিত ভিটামিন সি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে, সেই সঙ্গে স্কাল্পের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়। ফলে চুল পড়ার প্রবণতা কমে যায়। প্রসঙ্গত, চুল পড়া বেড়ে যায় দেহে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি দেখা দিলে। তাই শরীরে এই ভিটামনটির ঘাটতি যেন কখনও দেখা না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। যারা আমলকি খেতে পছন্দ করেন না বা আমলকী খেতে ভাল লাগে না তারা অন্যভাবে আমলকি ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে চামচ আমলকির রসের সঙ্গে চামচ লেবুর রস ভাল্ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর আপনার তৈরি করা সেই মিশ্রনটি ভাল করে চুলে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিয়ে পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।

 

তেল মাসাজঃ

তেল মাসাজ করাটা প্রতিদিন চুল পড়া আটাকানোর জন্য জরুরি। এমনটা করলে মাথায় থাকা ত্বকের রক্ত প্রবাহ খুব বেশী পরিমাণে বেড়ে যায়।  ফলে আপনার মাথার চুলের গোড়া আরও শক্তপোক্ত হয়। আর একবার আপনার মাথার চুলের গোড়া মজবুত হয়ে গেলে চুল পড়া স্বাভাবিক ভাবে কমে যায়। এক্ষেত্রে আপনারা মাসাজ করার জন্য নারকেল তেল, বাদাম তেল, অলিভ অয়েল অথবা আমলার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
 
অ্যালোভেরাঃ
অ্যালোভেরাতে রয়েছে এমন কিছু এনজাইম, যা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে আপনার মাথা থেকে চুল পড়লেও মাথা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url